শীতকালীন রোগ সমূহ এবং প্রতিকার

শীতকালীন রোগ সমূহ এবং প্রতিকার নিয়ে আজকের আর্টিকেল। আর কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশে শীত মৌসুম সম্পন্ন ভাবে চলে আসবে। ঢাকায় বা শহর অঞ্চলগুলোতে শীতের ভাব ততটা বুঝা যায় না, গ্রামীণ অঞ্চল গুলোতে বেশ ঠান্ডা পড়ে।
গরমের তুলনায় শীত অনেকটাই আরামদায়ক কিন্তু প্রতিবছর এই সময় বেশি কিছু বাড়তি রোগ বেঁধে দেখা যায় শীতকালে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই সমস্যাটা বেশি জটিলতা তৈরি করে থাকে। চলুন জেনে নেই শীতকালীন রোগসমূহ এবং প্রতিকার সম্পর্কে।

সূচিপত্র: শীতকালীন রোগ সমূহ এবং প্রতিকার 

.

শীতকালীন রোগ সমূহ

শীতকালীন রোগসমূহ সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকতে হবে, কারণ শীতকালে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগী দেখা যায়। মেডিসিন এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাসিনাতুন জান্নাত বিবিসি বাংলাদেশ কে বলেছেন, এই সময়টায় ঠান্ডা জনিত সমস্যা গুলো বেশি দেখা যায়। 

যেমন কাশি, অ্যাজমা প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, সাময়িক জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি হয়ে থাকে। এই সময়ে প্রচুর পরিমাণ বাতাসের সঙ্গে ধুলাবালি থাকে যার কারনে এলার্জি বা শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে এই রোগগুলো শিশু এবং বয়স্ক মানুষদের বেশি আক্রান্ত করে। 

ঠিক সময়ে সনাতন করা না গেলে সেটা অনেক সময় নিউমোনিয়াতে রূপ নিতে পারে। আবার ঠান্ডার কারণে অনেক সময় টনসিল বেড়ে গিয়ে ব্যাথার সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও যেই রোগ গোল আক্রান্ত করে থাকে, সেগুলো পয়েন্ট আকারে বর্ণনা করা হলো :

1. ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া ও ডেঙ্গু

শীতকালে মশা বাহিত ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু রোগ সহ নানা ভাইরাস জ্বরের রোগের প্রকল্প দেখা যায়। এই সময়ে অনেক স্থানে মশার প্রকল্পও বাড়ে।ডেঙ্গু সাধারণত বর্ষাকালীন রোগ হলেও এখন শীতকালেও এটির বিস্তার দেখা যায়। 

তাই আমাদের সকলকে শীতকালে মশার কামড় থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আপনি দিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর আসা, বারবার জ্বর আসা, গিটের ব্যথা ইত্যাদির লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

2. কুসুম গরম পানির ব্যবহার

চিকিৎসক হাসিনাতুন জান্নাত বলেছেন, গরম শেষ হলে শীত শুরু হওয়ার সময় আবহাওয়ার যে পরিবর্তন ঘটে, তাতে অনেক শরীর চট করে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনা। তাই অনেকের জ্বর হয়ে থাকে। তাই আমাদের শীতের প্রথম থেকে শীতের না হওয়া পর্যন্ত হালকা কুসুম গরম পানি খেতে হবে এবং আপনি যদি হাত মুখ ধুতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই কুসুম গরম পানি দিয়ে হাত মুখ ধুতে হবে।

3. পাতলা পায়খানা

হঠাৎ করে প্রচন্ড ঠান্ডা লাগার কারণে শিশুদেরও আবার অনেক সময় বড়দের পাতলা পায়খানা দেখা যায় বেশি ঠান্ডার কারণে বয়স্কদের সাথে এই ঘটনা ঘটে থাকে । তাই আমাদের বেশি ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। 

চিকিৎসক হাসিনাতুন জান্নাত পরামর্শ দেন যে এই সমস্যা এড়াতে তিনি বাহিরের খাবার একেবারে না খাওয়া নির্দেশ দিয়েছে। বয়স্ক শিশুদের গরম কাপড়ের পাশাপাশি সব সময় হাতমোজা ও মোজা পড়ে থাকার পরামর্শ দেন।

4. চামড়া শুষ্ক হয়ে ওঠা

হাসিনাতুন জান্নাত বলেছেন, শীতের সময় শুষ্কতার কারণে শরীরের তত শুষ্ক হয়ে ওঠে। ফলে অনেক সময় চুলকানি ও ব্যথা অনুভব হতে পারি।, অনেক সময় এলার্জির কারণে এটি হতে পারে। বিশেষ করে যাদের ধুলাবালিতে এলার্জি হয়। 

এটি সামলাতে নিয়মিতভাবে আমাদের অলিভ অয়েল এবং লোশন বা নারিকেল জাতীয় তেল ব্যবহার করতে হবে তাহলেই চামড়া স্বাভাবিক থাকবে।

5. ধুলাবালি থেকে সতর্কতা

শীতের সময় বাতাসে ধুলাবালি বেড়ে যায়। এবং ঢাকার মত শহর বাতাসে নানা ধরনের ধাতুর পরিমাণও অনেক বেড়ে যায়। যা সকলের জন্যই ক্ষতিকর। ধুলাবালি ও ক্ষতিকর ধাতুর থেকে বাঁচতে হলে ভাইরে বের হওয়ার সময় মুখে মাস্ক পড়ে বের হতে হবে। 

আবার যদি ধুলাবালিতে সমস্যা আছে, তাদের এরকম চুলকানি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আমরা যদি ধুলাবালি থেকে দূরত্ব বজায় রাখি তাহলে চুলকানি ভাই এলার্জি ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ থাকবে না।

6. ডায়াবেটিক ও ক্রনিক আক্রান্তরা

সাধারণত যাদের ডায়াবেটিক এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, তাদের জন্য শীতকাল বড় একটি সমস্যার কারণ হতে পারে। কারণ এই সময় তাদের জটিলতা আরো বেশি করে দেয়া যায়। অনেকের ক্ষেত্রে অনিদ্রার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। 

এরকম সমস্যা দেখা দিলে আমাদের অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মতামত নিতে হবে। তাছাড়াও সমস্যা অনুযায়ী চিকিৎসক তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।

শীতকালীন রোগের প্রতিকার

মেডিসিন চিকিৎসক হাসিনাতুন জান্নাত শিশু বা বয়স্ক থেকে শুরু করে সবাইকে শীতের সময় কয়েকটি বিষয়ে এড়িয়ে চলার কথা বলেছেন। প্রথমত, শীতের ঠান্ডা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। গরম কাপড় পড়তে হবে, কেন হাত ঢেকে রাখতে হবে, গলায় মাফলার ব্যবহার করতে হবে। 

ঠান্ডা একেবারে এড়িয়ে চলতে হবেব গোসল বা হাতমুখ ধোয়া থেকে শুরু করে সব সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। খাবার পানির ক্ষেত্রেও হালকা গরম পানি মিশিয়ে খেতে পারলে ভালো। 

এই সময় ঠান্ডা খাবার, যেমন আইসক্রিম, কোক ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত। বাইরের ধোয়া বা তোলা এড়িয়ে চলার সময় মার্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রয়োজনে তোকে চাহিদা অনুযায়ী ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।

যা করা উচিত:

শীতের সময় প্রচুর পানি খাওয়া উচিত বলে বলেছেন চিকিৎসক হাসিনাতুন জান্নাত। এছাড়াও ভিটামিন সি রয়েছে এমন খাবার যেমন জলপাই, কমলা, লেবু ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। এগুলো এক প্রকার প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। 

শিশুরা অনেক সময় শরীরের গরম কাপড় রাখে বা খুলে ফেলে। তাই তাদের দিকে সতর্ক নজর রাখা উচিত। শীতকালে ও নিয়মিতভাবে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করতে হবে।

আরো পড়ুন

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url