শীতকালীন শসা চাষ পদ্ধতি

প্রিয় বন্ধুরা, শীতকালে একটি মাত্রই লাভজনক ফসল তা হচ্ছে শসা। শীতকালে শসা চাষ করার একটি মাত্র জাত হল সাবিরা শসা। শীতকালীন শসা চাষ পদ্ধতি, শসা খরিপ মৌসুমীর চাষ উপযোগী একটি ফসল। তবে বর্তমানে শীতকালেও শশা চাষ করা যায়। শীতকালে শসা চাষের জন্য শীতকালীন জাত এবং গ্রীষ্মকালে চাষের জন্য শসার গ্রীষ্মকালীন চাষ করতে হবে। সামনে যেহেতু শীতকাল তাই আপনাদের সামনে আধুনিক পদ্ধতিতে শীতকালীন শসা পদ্ধতি সম্পর্কে তুলে ধরব।
শীতকালে শসার কোন জাতটা চাষ করলে সবচেয়ে ভালো হয় এবং কিভাবে চাষ করলে বেশি ফলন হবে, বিস্তারিত বিষয়গুলো থাকবে আজকের এই পোস্টে। তাই যারা শীতকাল শসা চাষ করে লাভবান হতে চান, কিন্তু শীতকালীন সরোজ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাহলে আজকের এই পোস্টটি শুধু তাদের জন্যই। আজকের পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিন শীতকালীন চাষ পদ্ধতি।

সূচিপত্র: শীতকালীন শসা চাষ পদ্ধতি

.

শীতকালীন শসা চাষ পদ্ধতি

শীতকালীন সমাস চাষ পদ্ধতি না জানায় অনেকেই শীতকালে শসা চাষ করে লাভবান হতে পারছে না। আজকে আমরা শসা চাষ করার প্রথম ধাপ থেকে শেষ পর্যন্ত আপনাদের সামনে তুলে ধরব। শীতকাল এ পেটানের মাচা দিয়ে শসা চাষ করলে খুবই লাভবান হওয়া যায়। এ পেটানে মাচাতে আপনি ডাবল বেডে শসা চাষ করতে পারবেন। অনেকেই এটি সিঙ্গেল বেটি করে থাকে। 

সাধারণ তো বর্ষাকালে সিঙ্গেল বেটি করা উত্তম। আর শীতকালে ডাবল বেডে করলে কোন প্রশংসা করতে হয় না। কারণ শীতকালে আদ্রতা দ্রুত মাটি শুকিয়ে যায়। বৃষ্টির পানি জমে থাকার সম্ভাবনা থাকে না। তাই আপনি চাইলেই ডাবল ভ্যাটের সাথে চাষ করতে পারবেন। ডাবল বেডে জমির মাটির আদ্রতা বেশি ধরে রাখা যায়। 

ডাবল বেড করার জন্য আপনাকে তিন ফুট চওড়া বেড করতে হবে। তিন ফুট বেড তৈরি করলে আপনি একটি বেড দুইটি করে লাইন দিতে পারবেন।। সে ক্ষেত্রে আপনাকে লাইন টু লাইন ২৭ ইঞ্চি এবং গাছ টু গাছ ১৮ ইঞ্চি। আর মাচার জন্য আপনারা এ পেটান মাচা তৈরি করতে পারেন। অল্প খরচে খুব ভালো একটি এবং কার্যকরী মাছে তৈরি হবে। 

আপনি যদি প্রযুক্তি বা আধুনিক টেকনোলজি টাকে এপ্লাই করেন তাহলে কম সময়ে, কম পরিশ্রমে, কম খরচে ভালো উৎপাদন করা সম্ভব। শীতকাল শসার চাষের উপযোগী জাত হল সাবিরা শসা। একটি সাবিরা শসার গাছ থেকে মোটামুটি চার থেকে পাঁচ কেজি ফলন দিতে পারি। 

আপনারা যারা শীতকালী শসা চাষ করতে চাচ্ছেন তাদের বলবো যে সাবিরা শসার জাতটি একবার এ পেটান বাড চাষ করে দেখেন । আধুনিক প্রযুক্তি টেকনোলজি ব্যবহার করে অ্যাপ্লাই করে তুই চাষ করতে পারেন তাহলে অল্প খরচে অধিক লাভবান হতে পারবেন।

শসা চাষে কীটনাশক

শসা সবজি বা ফসল চাষের মধ্যে শশা একটি অত্যন্ত স্পষ্টীয় ও নরম গাছ। যেমন তেমনভাবে আপনারা আপনারা যদি কীটনাশক ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে, শসা গাছের জন্য অনেক ক্ষতিকরক হয়ে থাকে। আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরব শসা চাষের সবচেয়ে উপযোগী কীটনাশক অভিটামিনের নাম সমূহ। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে শসা চাষে কীটনাশকের নাম জেনে নিন। শসা চাষে কীটনাশক আপনাদের মাঝে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো :

1. শশা অন্তত স্পর্শীয় গাছ, অধিক কীটনাশক সহনশীল গাছ না। তাই শসা খাচ্ছি কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষেত্রে অবলম্বন করতে হয়।

2. শসার গোড়া পচা রোগের জন্য প্রথমেই জানাবো সবচাইতে কার্যকরী কীটনাশক হলো : অটোস্টিন বা ম্যানসার সবচাইতে ভালো কাজ করে শসা চাষের জন্য। ইন্ডোফিল এম-৪৫ যদি সাথে দেন তাহলে সবচাইতে ভালো ফলাফল পাবেন।

3. শশা গাছ ঢলে পড়া রোগের জন্য সব চাইতে ভালো কার্যকরী কীটনাশক হচ্ছে: ব্যাকট্রল অথবা ব্যাকটাফ 1 ml অথবা 2 ml করে পানিতে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় স্প্রে করে দিতে পারেন।

4. শসার কাঠই প্রকার জন্য যখন শসা গাছ ছোট থাকে তখন গাছের গোড়া কেটে দেয় এইজন্য জমিতে পানি দিবেন অর্থাৎ জোর রাখবেন। যে থাকা কালীন গ্রীন ফুরান 5 জি ২ কেজি হাড়ে বিঘাই ছিটিয়ে প্রয়োগ করবেন। আর যদি অতিরিক্ত হয় তাহলে ডারস্ বান ( ক্লোরপাইরিফস কোম্পানি কীটনাশক ) সবচাইতে কার্যকর কীটনাশক এটি। পানিতে 1 ml অথবা 2 ml করে প্রয়োগ করতে পারেন।

5. শসার ফল ছিদ্রকারী প্রকার জন্য পোকার জন্য আপনারা সবচাইতে কার্যকরী কীটনাশক কোনটি ব্যবহার করবেন, এটি হচ্ছে রেলোথ্রিন, প্রতি লিটার পানিতে 1 ml থেকে 2 ml যদি বেশি হয় সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করবেন, অথবা 2ml অথবা 1 ml করে সপ্তাহে দুইবার আর যদি এত কমে না তাহলে VoliamFlexi, ওয়ান্ডার 0.5 গ্রাম করে আপনারা শসার জমিতে স্প্রে করবেন।

6. সাড়ে সাতসের ক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো অনুখাদ্যের মধ্যে আপনারা ব্যবহার করতে পারেন ব্রোক্সিল জিংক সাথে লিবরেল বোরণ শসা চাষের কোন খাদ্যের মধ্যে সবচেয়ে ভালো। এটি আপনারা একটুও করতে পারবেন এবং পানির সাথে গুলে গাছের গোড়ায় দিতে পারবেন।

7. পিজি আর গ্রুপের মধ্যে সবচাইতে কার্যকরী কীটনাশক শসা চাষের জন্য। প্রথমে পিজিআর গ্রুপের গ্রিন টনিক অথবা বায়োগ্রীন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে পিজিআর গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করার সাথে সাথে সঙ্গে যোগ করতে পারেন সলুবোরণ সে ক্ষেত্রে ভালো ফলন পাওয়া যাবে শসার।

শসা গাছে কি কি সার দিতে হয়?

প্রিয় পাঠক, ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন শীতকালীন শসা চাষ পদ্ধতি, শসা চাষে কীটনাশক ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে। আপনারা শসা চাষ করতে গিয়ে একটি ঝামেলায় পড়ে থাকেন যে শসার গাছে কি কি সার দিতে হয় এই নিয়ে। এবার আপনাদের মাঝে শসা কাটে কি কি সার দিতে হয় ছক আকারে তুলে ধরব।


সারের নাম

হেক্টর প্রতি সার

শতক প্রতি সার


পঁচা গোবর

৫ টন

২০ কেজি


ইউরিয়া

৮০ কেজি

৩২০ গ্রাম


টি এস পি

১০০ কেজি

৪০০ গ্রাম


এম ও পি

৫০ কেজি

২০০ গ্রাম


জিপসাম

৫০ কেজি

২০০ গ্রাম


দস্তা

১২ কেজি

৪৮ গ্রাম


বোরন

১০ কেজি

৪০ গ্রাম

৫০০০ কেজি গোবর, ১০০ কেজি টিএসপি , ৫০ কেজি এমওপি, ৫০ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি দস্তা, ১০ কেজি বোরণ জমি তৈরির সময় মাটিতে প্রয়োগ করুন। অবশিষ্ট গোবর (৫০০০ কেজি), টিএসপি (১০০ কেজি), ইউরিয়া (৮০ কেজি), পটাশ (৫০কেজি) চারা রোপণের ৫-৬ দিন পূর্বে মাদায় প্রয়োগ করুন। 

চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর ১ম বার ,ফুল আসার পর ২য় বার এবং ফল ধরার সময় ৪০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করুন। মাটির ধরন ধরণ সারের মাত্রা কম বেশি করুন।মাদায় চারা রোপণের পূর্বে সার দেয়ার পর পানি দিয়ে মাদার মাটি ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। অতঃপর মাটিতে জো এলে ৭-১০ দিন পর চারা রোপণ করতে হবে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আজকে আর্টিকেল এর মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে, শসা চাষে কীটনাশকের ব্যবহার ও শশা গাছের কি কি ছার দিতে হয় এমন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে। আপনারা যারা শীতকালে শসা চাষ করতে চাচ্ছেন শুধু তাদের চিন্তা বিবেচনা করেই আজকের এই আর্টিকেল। যারা শীতকালীন শসা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তারা আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে জেনে নিন।

আশা করছি ইতিমধ্যে আপনারা শীতকালীন শসা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে তাইলে এবং আমাদের লেখাটি ভালো লেগে থাকলে, আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url