বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত ও করণীয় কি
আজকের পোষ্টের মূল বিষয় হলো বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত সম্পর্কে বিস্তারিত। আরো থাকবে বাচ্চাদের কাছে সিরাপ কোনটা ভালো হবে এবং শিশু সর্দি কাশির ওষুধের নাম কি কি সেই সম্পর্কে। আপনারা হয়তো বা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইন্টারনেটে অনেক খুঁজে করছেন। কিন্তু মনের মত কোন সঠিক তথ্য খুঁজে পাননি। যার ফলে কাঙ্খিত সমস্যাটি আপনি সমাধান করতে পারছেন না। আজকে আমাদের আর্টিকেল পড়ে জানতে পারবেন বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত।
আরো থাকবে বাচ্চাদের শুকনো কাশি কেন হয় এবং শিশুদের সর্দি-কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা কিভাবে করবেন এবং ছোট বাচ্চার কাশির ওষুধ বাচ্চাদের কাশিরে এন্টিবায়োটিক ওষুধের নাম, বাচ্চাদের কাশি হলে করণীয় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আজকের এই পোষ্টে আলোচনা করা হয়েছে। তবে সেগুলো জানতে পোস্টটি অবশেষে পর্যন্ত আপনাকে মনোযোগ সহকারে করতে হবে।
সূচিপত্র: বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত ও করণীয় কি
.
বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত ও করণীয় কি?
বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত বা কি ওষুধ খাওয়ালে তাড়াতাড়ি এই সমস্যা থেকে বের হতে পারবে। প্রতিটি মা-বাবার এটি একটি চিন্তার বিষয়। অনেকে মা বাবা আছে যারা জানেনা বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত বা শিশুদের জ্বর হলে কি করবেন সেই সম্পর্কে বঞ্চিত থাকে।
আজকের আর্টিকেল পড়ে জানতে পারবেন বাচ্চার জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত এবং করনীয় কি কি। শরীরের উষ্ণতা বৃদ্ধি (>৯৮.৬০ ফাঃ) বা শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে জোর বলা হয়। অসাধারণ তোর শরীরের কোন অসুস্থতা বা সংক্রমনের লক্ষণ অর্থাৎ জ্বর কোন রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র।
বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন ধরনের জল হতে পারে। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, নিউমোনিয়া, হাম এবং প্রস্রাবের সংক্রমণ ইত্যাদি নানা করনে জ্বর হতে পারে। ভাইরালফিভার বা ভাইরাস জ্বরের বছরের যে কোন সময় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও সাধারণত গরমের সময় বা গ্রীষ্মকালে এই রোগ প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
তাপমাত্রা মাপার নিয়ম
কপালে হাত দিলে টের পাওয়া যায় কারো জ্বর আছে কিনা। তবে জ্বর হয়েছে, এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য থার্মোমিটার দিয়ে মেপে দেখতে হয়। সাধারণত মুখ ও বগলের তাপমাত্রা মাপা হয়। এছাড়াও কপাল বা কানেও তাপমাত্রা মাপা যায়। জ্বর মাপার জন্য বিভিন্ন ধরনের থার্মোমিটার বাজারে প্রচলিত আছে। এরমধ্যে সবচেয়ে পুরনো জনপ্রিয় হলো পারদ থার্মোমিটার।
এটি সহজেই পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তায়। এখন কিছু ডিজিটাল থার্মোমিটার পাওয়া যাচ্ছে। যা দিয়ে সহজেই শরীরে তাপমাত্রা মাপা যায়। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতে আরো এক ধরনের থার্মোমিটার জনপ্রিয়তা পেয়েছি তাহলে ইনফ্রারেট থার্মোমিটার। যা দিয়ে শরীরের স্পর্শ না করেই শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব।
আমরা সাধারণত থার্মোমিটার এক মিনিট জিব্বা বা বগলের নিচে রেখে তাপমাত্রা নির্ণয় করি। তবে মেয়েদের মুখে থার্মোমিটার দেওয়া উচিত নয়। ডিজিটাল থার্মোমিটার শব্দ করলেই বুঝতে হবে যে তাপমাত্রা মাপা শেষ। আর ইনফ্রারেড থার্মোমিটার সাধারণত কপালের সামনে ধরলেই তাপমাত্রা নির্দেশ করে।
তবে এই ক্ষেত্রে তাপমাত্রা একটু কম বেশি দেখাতে পারে। মানুষের দেহের তাপমাত্রার কোন ক্রমে ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট এরকম বা ১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হতে পারে না। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে সর্বোচ্চ ৯৮.৬° ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা মুখের তাপমাত্রা কে বোঝায়।
এর বেশি হলে আমরা জলের আক্রমণ বলে থাকি। একজন সুস্থ মানুষের জন্য মুখে ৩৩.২ থেকে ৩৮.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস, পায়ুপথে ৩৪.৪ থেকে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কানের পর্দায় ৩৫.৪ থেকে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বগলে অতিরিক.৫ থেকে ৩৭.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হল স্বাভাবিক তাপমাত্রা।
জ্বর কমানো সাধারণ ব্যবস্থা
* শিশুকে খোলামেলা ঘরে রাখা, যথাসম্ভব কম কাপড়চোপড় (একপ্রস্থের কাপড়) পড়ানো, শিশু শরীর আলতো ভাবে মালিশ করা। বারবার পানি পান ও তরল খাবার খাওয়ানো।
* অধুনা গবেষণা মতে, Nজ্বর কমতে স্পঞ্জিং, কুলিং ব্র্যাকেট বা অন্যান্য পরিপূরক ও বিকল্প ওষুধের ভূমিকা নগণ্য।
* শিশু অতিরিক্ত জ্বর কমিয়ে আনতে জলশোষক তোয়াল, কুসুম গরম পানিতে চুবিয়ে প্রথমে পা, বুক, পিঠ ও কপাল এভাবে পর্যায়ক্রমে ১৫ থেকে ২০ মিনিট শরীর স্পঞ্জ করা।
প্যারাসিটামল সিরাপ
* শিশু বয়সে ওজন হিসেবে প্যারাসিটামল সিরাপ ১০ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম / কেজিপ্রতি চার থেকে ছয় ঘন্টা অন্তর সেবন করানো যায়। কিন্তু দৈনিক পরিমাণ যেন ৬০ মিলিগ্রাম / প্রতি কেজি বেশি না হয়।
* প্যারাসিটামল খাওয়ানোর ৩০ মিনিট পর ওষুধের কার্যকারিতা শুরু হয় এবং ১-২ ঘন্টা পরে শিশুর জ্বর প্রায় ২ থেকে ৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত নামে।
প্যারাসিটামল সাপোজিটরি
* প্যারাসিটামল ১০-২০ মিলিগ্রাম/ কেজি ওজন হিসাবে পায়ুপথে প্রয়োগ করা যায়। সিরাপ সেবনের তুলনায় পায়ুপথে প্যারাসিটামল এর কার্যকারিতা দেরিতে ( ওষুধ প্রয়োগের প্রায় ৬০ মিনিট পর ) শুরু হয়।
* এরা ব্যবহারের সমান ফল পেতে পায়ুপথে বেশি মাত্রায় প্যারাসিটামল দিতে হবে।
বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত
* শিশুদের জ্বর কমাতে সঠিক মাত্রায় প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রোফেন নিরাপদ কার্যকরী ওষুধ।
* মাত্রা ঠিক না থাকলে প্যারাসিটামল প্রক্রিয়ায় লিভারের ক্ষতি এবং আইবুপ্রোফেন থেকে আন্ত্রিক বা কিডনির ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
* শিশু বয়সের যেকোন ওষুধ মুখে প্রয়োগের চেষ্টা করা উচিত।
* কোনভাবে মুখে খাওয়ানো সম্ভব না হলে (অজ্ঞান শিশু ক্রমাগত বমি), কেবল তখনই পায়ুপথে সাপোজিটরি প্রয়োগ করা যায়। সাপোজিটরির জর্ দ্রুত কমে, এমন ধারণা ভুল।
ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ
প্রিয় পাঠক, ইতিমধ্যে আমরা আনতে পেরেছি বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত ও করণীয় কি, জ্বর কমানো সাধারণ ব্যবস্থা, বাচ্চাদের তাপমাত্রা মাপার নিয়ম ইত্যাদি বিষয়। এবার আলোচনা করব কি কি লক্ষণ দেখলে বোঝা যাবে যে ভাইর জ্বরের এমন আক্রমণ করেছে। চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ কি কি?
* হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া।
* চোখ লাল হয়ে যাওয়া।
* সারা শরীর ও হাতে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা।
* প্রচন্ড মাথা ব্যথা করা।
* খাবারের অরুচি, মুখে বিস্বাদ লাগা।
* বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া।
* শরীরের চামড়ায় বা ত্বকে র্যাশ দেখা দেওয়া।
* শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া।
* শীত শীত অনুভূতি হওয়া এবং ঘাম দিয়ে জ্বর আসা।
* শিশুদের অতিরিক্ত জ্বরের কারণে কখনো কখনো খিচুনি হতে পারে।
করণীয়
* দ্রুতজ্বর কমাতে সারা শরীর কুসুম গরম পানিতে ভেজানো গামছা বা দোয়েলা দিয়ে মুসাতে হবে।
* মাথায় পানি দিতে হবে।
* রোগীকে ফ্যানের বাতাসে রাখুন।
* জ্বর ও শরীরের ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল বা ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। জ্বর বেশি মাত্রায় হলে মলদ্বারে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি ব্যবহার করুন।
* স্বাভাবিক সব খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণ অনেক খাওয়াতে হবে। তবে তরল খাবার অবশ্যই বেশি বেশি দিতে হবে।
* টক জাতীয় ফল জাম্বুরা, আমড়া, কমলা, লেবু ইত্যাদি খাওয়া নো ভালো।
মনে রাখবেন, জ্বর তিন দিনের মধ্যে প্রশমিত না হলে বা আনুষঙ্গিক অন্যান্য উপসর্গের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, খিচুনি, অতিরিক্ত বমি, পাতলা পায়খানার জন্য দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
ভাইরাস জ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য করনীয়
ভাইরাল জ্বরের জন্য আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ নিন - আপনার যদি ভাইরাল জ্বর থাকে তবে স্ব-ওষুধ এড়ানো ভাল। আপনার হায়দ্রাবাদে আপনার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত এবং তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত। এর কারণ হল ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে আপনার জ্বর হতে পারে, সেক্ষেত্রে আপনার আলাদা ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রচুর বিশ্রাম নিন যাতে আপনার শরীর জ্বরের সাথে লড়াই করতে পারে এবং আপনাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে সাহায্য করতে পারে - আপনি যদি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পান তবে আপনার শরীর চাপের সাথে মানিয়ে নিতে সক্ষম হবে না এবং আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন না। আপনি যদি আপনার স্বাভাবিক রুটিন চালিয়ে যান তবে এটি আপনার শরীরের জ্বরের সাথে লড়াই করার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
এছাড়াও, যখন আপনার জ্বর হয়, আপনি যেভাবেই হোক ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম আবশ্যক। হালকা গরম জল দিয়ে আপনার কপালে কাপড় লাগিয়ে বা স্পঞ্জ স্নান করে আপনার শরীরকে ঠান্ডা রাখুন। এটি আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে এবং এটি ঠান্ডা হতে সাহায্য করবে। এটি প্রয়োজনীয় কারণ আপনার জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে এবং এটি কমিয়ে আনা গুরুত্বপূর্ণ।
আয়োজিত থাকার. যতটা সম্ভব তরল খাওয়ার চেষ্টা করুন যাতে আপনার শরীর ডিহাইড্রেটেড না হয় এবং ভাইরাল জ্বরে এড়াতে কিছু খাবার রয়েছে। আপনার জ্বর হলে, আপনার শরীর সহজেই তরল হারাতে থাকে, যার ফলে ডিহাইড্রেশন হয়। অতএব, তরল গ্রহণ বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি জল বিরক্তিকর মনে করেন তবে আপনি পাতলা রস বা পরিষ্কার স্যুপ পান করতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
আজকের পোস্টটি থেকে আমরা বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত ও করণীয় কি এই সম্পর্কে জেনেছি। এছাড়াও আজকের পোস্টে আমরা আরো জেনেছি ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ, ভাইরাস জ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে।
আশা করছি আজকের পোস্ট থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। আমরা প্রতিনিয়ত এই ধরনের পোস্ট আপনাদের উদ্দেশ্য শেয়ার করে থাকি। নিয়মিত পোস্ট করতে ওয়েবসাইট টি ফলো করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url