৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়
বাংলাদেশে অনেক মানুষই আছে যারা ওজন নিয়ে খুবই চিন্তিত কোন ভাবেই ওজন কমাতে পারছেন না। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। অনেকের কাছেই এই বিষয়টি অসম্ভব মনে হবে বা অনেকেই ভাববে যে ৭ দিনে দশ কেজির জন্য কমানো আদৌ কি সম্ভব এমন প্রশ্ন জায়গাটা স্বাভাবিক। অনেকেই ওজন কমানোর জন্য অনেক দিন থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু কিছুতেই ওজন কমাতে পারছে না তাদের জন্যই আজকের এই পোস্ট (৭ দিনে ১০ কেজি ওজনের কমানোর উপায় )।
ইতিমধ্যে অনেকেই ভাবছেন যে আসলেই ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানো সম্ভব কী সম্ভব কিন্তু এটি বিপদজনকও বটে। এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোটা পড়লে ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমাতে পারবেন ইনশাল্লাহ আর না পারলেও উল্লেখযোগ্য হাড়ে ওজন কমবে বলে আশা করছি। চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক সাত দিনের ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আজকে যেই টপিক নিয়ে আমরা আলোচনা করব সেটি হল ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায় আরো থাকতে ওজন কমাতে চিয়া সিট খাওয়ার নিয়ম, ওজন কমাতে কি কি খাবার বাদ দিতে হবে, ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন কত ক্যালরি বার্ন করতে হবে এবং ওজন কমানোর জন্য সকালে খালি পেটে কি খেতে হবে এই সকল গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আজকে আপনাদের সুবিধার জন্য আলোচনা করব। আপনারা যারা ওজন নিয়ে চিন্তিত আজকের টপিক শুধু তাদের জন্যই।
৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়
আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হলো ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়। অল্প সময় ওজন কমানোর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য ও নিয়মাফিক চলাফেরা আর সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন শারীরিক মনভাব। ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর জন্য আপনাকে প্রথমত আপনার ডায়েটে অর্থাৎ খাবারের কিছু বড় পরিবর্তন আনতে হবে এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করতে হবে।
আপনাকে একটা কথা মনে রাখতে হবে ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানো খুবই কষ্টসাধ্য একটি কাজ। শুধুমাত্র যে খাবারের তালিকা পরিবর্তন করলেই আপনার ওজন কমবে তা কিন্তু নয়। খাবারের তালিকা বা ডায়েটের সাথে সাথে আপনাকে ভালো এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
তাহলেই সম্ভব ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানো। ব্যায়ামের জন্য একটি ভালো সময় সূচি আপনাকে তৈরি করে নিতে হবে যাতে আপনি ব্যায়ামগুলো ৭ দিনে নিয়ম অনুযায়ী সময় ধরে করতে পারেন এভাবেই নিজেকে সবসময় তৈরি রাখতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যখন হাঁটবেন, প্রথমে ৫ মিনিটের জন্য দৌড়ান এবং তারপর আবার হাঁটতে থাকুন। এটি বেশি ক্যালরি পোড়ায়। জুম্বা, অ্যারোবিকস এবং সাঁতার দ্রুত ওজন কমানোর জন্য খুব ভালো ব্যায়াম।
ওজন কমাতে খাবারের তালিকার পরিকল্পনা :
আপনাকে সাত দিনের জন্য এই খাবারের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সাধারণত আমরা সকালে,দুপুরের, রাতে খাবার খেয়ে থাকি অর্থাৎ সকালের খাবারে, দুপুরের খাবারই এবং রাতের খাবারই জন্য চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু খাবার পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আপনি সারাদিন যে খাবারগুলি খান তা নোট করার জন্য একটি ডাইরি। তিন উক্তি কি কি খাবার খেলন তার একটি তালিকা তৈরি করে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন যে কোনগুলা খাবার আপনার পরিবর্তন করতে হবে। সেগুলো খাবার আপনার শরীরের ওজন ভারতে সাহায্য করে সেগুলো ত্যাগ করতে হবে।
ওজন কমাতে যে খাদ্যভ্যাস ত্যাগ করতে হবে :
ওজন কমাতে কিছু খাদ্যভ্যাস আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে যে অভ্যাসগুলো আপনার বেশি খাওয়াকে প্রলুব্ধ করতে পারে। তাই সেই অভ্যাস গুলো দূকার প্রয়োজন। যেমন:
- খুব দ্রুত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে
- সব সময় ডেজার্ট খাওয়া যাবে না
- জাঙ্ক ফুড ট্যাগ করতে হবে
- ক্ষুধার্ত না থাকলে খাওয়া যাবেনা
- পেটের এক- তৃতীয়াংশ খালি রেখে খেতে হবে
- দাঁড়িয়ে থেকে খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে হবে
এছারাও যে খাবারগুলা নিষেধাজ্ঞা করতে হবে তাহলে কার্বোহাইড্রেটের যুক্ত খাবার সীমিত করতে হবে এই খাবার গ্রহণের অধিক সতর্ক থাকতে হবে। আরো ক্যালোরি গ্রহণ সীমাবদ্ধ করতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের সীমিত করতে হবে যেমন পূর্ণচর্বিযুক্ত খাবার ও দুগ্ধজাত খাবার।
এছাড়াও চিনি যুক্ত খাবার এবং পানিগুলোতে চিনির পরিমাপ বেশি থাকে। তাই মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং পানীয় যেমন ক্যান্ডি, চকলেট, কেক, হিমায়িত দই, সোডা, স্যার যুক্ত কফি পানীয়, সব ড্রিংক এবং মিষ্টি চা এড়িয়ে চলা আপনার চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
ওজন কমানোর ব্যায়াম
ওজন কমাতে ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবার আসি আপনাকে কত সময় ধরে ব্যায়াম করতে হবে? আপনাদের অনেকের মনে জাগতে পারে ব্যায়াম কতক্ষণ করা উচিত ওর কত ফোন করতে হবে।
একটা কথা মাথায় রাখবেন দ্রুত ওজন কমাতে হলে অবশ্যই অনেক কষ্ট করতে হবে আপনাকে। স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ১৫০০ থেকে ২০০০ ক্যালরি বেশি পড়াতে হবে আপনাকে। কিন্তু আপনি যদি ঠিক সই উপায়ও ওজন কমাতে চাইলে আপনাকে ধীরে ধীরে ওজন কমাতে হবে।
ওজন কমানোর জন্য ক্যালোরি গ্রহণ কমানো এবং শারীরিক ব্যায়ামের সমন্বয় করা প্রয়োজন। সাধারণত একজন ব্যক্তির জন্য কতটা ব্যায়াম যথেষ্ট তার কোন উত্তর নেই। কতক্ষণ আপনি ব্যায়াম করবেন সেটা আপনার ওজন কমানোর ওপরে নির্ধারিত হবে।
আপনি যদি খুব দ্রুত ওজন কমাতে চান সে ক্ষেত্রে আদর্শ মানুষ হচ্ছে দৈনিক 1 ঘন্টা কঠোর ব্যায়াম করতে হবে আপনাকে। আরেকটা কথা খুবই গুরুত্ব সহকারে মনে রাখবেন যে আপনি কখনোই প্রক্রিয়াটি তাড়াহুড়া করার চেষ্টা করবেন না।
ওজন কমাতে চেয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
ওজন কমাতে চেয়া সিড খাওয়ার কোন তুলনা নেই। চিয়া সিড আপনাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমরা সবাই চিয়া সিড কে সুপারফুট হিসেবে চিনে থাকি। বর্তমানে সবাই স্বাস্থ্য নিয়ে দিন দিন অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে, তাই প্রতিদিন খাদ্য তালকায় অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ চিয়া সিড কে খুব বেশি প্রয়োজনীয় মনে করে থাকেন।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে চিয়া সিট খেলে কি ওজন কমে? হ্যাঁ। চিয়া সিড খেলে অবশ্যই ওজন কমে। কারণ চিয়া সিড রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে ও খুদা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আপনারা চিয়া সিডের সাথে লেবু মিশিয়ে খেতে পারেন।
চিয়া সিড ও লেবুর মিশ্রণ শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর করে এবং মেটাবলিক সক্ষমতা ভারতের সাহায্য করে যা আপনার শরীরের ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া আমরা জানি লেবু আমাদের দেহের চর্বি কমাতে সাহায্য করে, বিদায় দুটো একসাথে খেলে অতিরিক্ত ওজন কমানো যায়।
তবে আমাদের চিয়া সিড আর লেবু নিয়মিতভাবে সঠিক নিয়ম অনুসারে খেতে হবে, সাথে ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আনতে হবে।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
আপনারা চিয়া সিড সরাসরি যেকোনো ফলের রস বা জুসের সাথে খাওয়া যায়। অনেকেই আছে যারা শুধু পানিতে মিশিয়ে খায়। নিজস্ব স্বাদ না থাকার কারণে প্রায় সব ধরনের খাবারের সাথে যেমন বেক করা বিস্কুট, প্যানকেক, ওয়াফেল, স্যুপ ও সালাতের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন ।
চিয়া সিড আপনার যেভাবে ভালো লাগে সেভাবেই খেতে পারেন। আপনি চাইলেই লেবু, চিয়া সিড, আপনার পছন্দের ফল দিয়ে একসাথে মিশিয়ে ঘরে বসে স্বাস্থ্যকর এনার্জি জুস বানাতে পারে।
চিয়া সিড খেলে কি হয়
চিয়া সিড খেলে হৃদরোগকে ঝুকি কমে ও রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়, চিয়া সিড খেলে রক্তের চিনির মাত্রা স্বাভাবিক থাকে এবং মসলা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারবেন। জাম, জেলি তৈরিতে চিনি বা মধুর পরিবর্তে ব্যবহার করতেও উপকার পাবেন।
চিয়াসিড খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত আদ্রতা এবং পুষ্টি যুক্ত হবে। চিয়া সিড খেলে আপনার শরীরের থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বা বর্জ্য পদার্থ বের হয়ে যাবে সাথে পেটের গ্যাসের সমস্যা কমায় এবং ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। চিয়া সিড নিয়মিত খেলে মুখের ত্বক, চুল, নখ সুন্দর হয়।
একটি কথা মাথায় রাখবেন অতিরিক্ত কোন কিছুই শরীরের জন্য ভালো না। অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে হজমের সমস্যা তৈরি হয়। এছাড়া অতিরিক্ত ফাইবার খাওয়ার ফলে পেটব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া মত সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই চিয়া সিড অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া যাবেনা। খাওয়ার সাথে সাথে পরিমাপ মতো পানি পান করতে হবে।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তোবা এত ক্ষণে জেনে গিয়েছেন যে ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়। এছাড়াও ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম। চিয়া সিড কিভাবে খেতে, হয় কি কি হয় তা সম্পর্কে। আপনার শরীরে যদি ওজন থাকে তাহলে কমিয়ে ফেলাটাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ ভারতীয় ওজন একাধিক জটিল রোগ ডেকে আনি।
আশা করছি আপনারা কীভাবে ওজন কমানো যায় তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url