তুলসী পাতার উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য
তুলসী কে বলা হয় সকল রোগের ঔষধ বিষেস করে সর্দি-কাশি গলা ব্যথায় বিস্ময়কর কাজ করে তুলসী। আমরা তুলসী পাতার সম্পর্কে অনেকই যানি আবার অনেকেই যানি না। আজকে আমরা যানবো তুরসী পাতার উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। তুলসী পাতাই হতে পারে আমাদের দেহের রোগ মুক্ত করার কারণ। তাই তুলসী পাতার উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যানতে হবে।
তুলসী পাতা আমাদের দেহের নানান রোগ নির্মাণে তুলসী পাতার ঔষধ খুবই কার্যকরী বলে মনে করা হয়। আজকে জানবো তুলসি পাতা আমাদের দেহের কোন কোন রোগের সাথে লড়াই করে রোগমুক্ত করে। আবার তুলসী পাতা আজ তোর জন্য নানাভাবে উপকারী আমরা অনেকেই এই কথা জানি।
তুলসী পাতার উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য
তুলসী পাতা হল ওষুধে গুণসম্পন্ন যা থেকে কঠিন রোগের সমাধান পেয়ে থাকি। বিশেষজ্ঞদের মতে তুলসী কে অভিযোজনীয় ভেষজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শরীরি বা দেহ যে অবস্থায় থাকুক না কেন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে এবং শরীরকে চাপের সাথে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারি শান্ত এবং শীতলতার অনুভূতি প্রচার করে থাকে।
তুলসীতে ইমিউনো মডেলেটরি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে যার ফলে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারি। নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে মানুষের ইমিয়ন সিস্টেম শক্তিশালী হয় এবং শরীরে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। তুলসী পাতায় আছি রেডিওপ্রাটেকটিব উপাদান যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। তুলসী পাতায় আরো আছে ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোজমারিনিক অ্যাসিড, মাইরেটিনাল, নিউটিলিন এবং এপি জেনিন।
এইসব উপাদান ক্যান্সার মত মরণব্যাধি রোগীর বিরুদ্ধে কাজ করতে কার্যকরী। বিশেষজ্ঞ মতে তুলসী পাতার রস এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে রোজ খেতে পারলে হৃদরোগ জনিত রোগ থেকে শুরু করে এলার্জি সমস্যা এমনি কিডনিতে পাথর হাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও তুলসী পাতা নিয়মিত খেলে মানুষের স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ হতে পারে।
পাশাপাশি তুলসীতে থাকা উপাদান মানুষের অবসর দূর করে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায়। যুগ যুগ ধরে ঠান্ডা জনিত রোগর মহা ওষুধ হিসেবে বর্ণ করা হয় তুলসী পাতা কে। ঠান্ডায় গলা ব্যাথা, মাথা ব্যথা, সর্দি-কাশি হলে তুলসী দিয়ে এক কাফ চা যেনো সহজ সমাধান। ত্বকে যত্ন পিছে নেই তুলসীর ব্যবহার।
ত্বকের ব্রণের সমস্যা সমাধানে একটি সহজলভ্য ও অন্যতম উপাদান হলো তুলসী পাতা। এই পাতার পেস্ট তৈরি করে তা ত্বকে লাগালি তোকে সমস্যাগুলো অনেকটাই কমে যায়। তুলসী পাতা থেকে যে রোগের সমাধান পেয়ে থাকি তা হলো:
- সর্দি-র্কাশি কমিয়ে দেয়
- গলা ব্যথা দূর করে
- ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ওজন কমায়
- ডায়াবেটিস দূরে রাখে
- গর্ভাবস্থা বা স্তন্যপান করানোর সময়
- রক্তপাতে সমস্যা দূর করে
তুলসী পাতা ছোট থেকে মধ্যবয়স্ক এবং বয়স্ক লোকের সকলেই এটা ব্যবহার করতে পারবে। তুলসী পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করে শেষ করা যাবে না। তুলসী পাতার রস শরীরের জ্বালা যন্ত্রণা কি দূর করতে সহায়তা করে। ক্ষতস্থানকে আমার শরীরের ফোলা স্থানগুলো কি সহজেই নিরাময় করে দেয় তুলসী পাতা।
অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে কি হয়
তুলসী হল ওষুধে কোন সম্পূর্ণ একটি গাছ। যেটা সেবন করে মানুষ সর্দি,কাশি, ঠান্ডা, গলা ব্যথা নানা জটিল ও কঠিন রোগের ঔষধ হিসেবে কাজে লাগছে। কিন্তু আমরা জানি না তুলসী পাতা আমাদের দেহের জন্য কতটুকু প্রয়োজন বা অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে কি হয়। মানব দেহের জন্য অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না সেটা ভালো হোক আর মন্দ হোক।
তুলসী পাতা বেশি পরিমাণ সেবনের ফলে শ্বাসকষ্ট, মূত্র ও কাশির সঙ্গে রক্ত আসতে পারে। যাদের ডাইবেটিকস আছে তারা তুলসী পাতা কখনোই অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করবেন না। ডাইবেটিক্স রোগীদের গ্লুকোজের মাত্র অতিরিক্ত কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। তুলসী পাতায় পারদ এবং আয়রনের মাত্রা বেশি থাকি যা আমাদের দাঁতের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত মাত্রায় তুলসী পাতা সেবনের ফলে আমাদের দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। আবার তুলসী পাতাতে আর্সেনিকের পরিমাপ বেশি পাওয়া যায় যা দাঁত নষ্ট করতে সহায়তা করে আবার দাঁতের ব্যথা অনুভব হতে পারে। তাই আমরা অতিরিক্ত তুলসী পাতা সেবন থেকে দূরে থাকবো।
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
ইতিমধ্যে তুলসী পাতার ক্ষমতার সম্পর্কে আমাদের ধারণা হয়ে গিয়েছে। আমরা অনেকেই মধু তুলসী পাতা একত্রে খেয়ে থাকি কিন্তু আমরা মধু তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে তেমন জানিনা এবং কীভাবে মধু ও তুলসী পাতা একত্রে খাবেন সেটাও বলে দিব। এবার জেনে নেওয়া যাক মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা ও এটা কিভাবে খাওয়া যায়।
প্রথমে আমরা একটি কাপের মধ্যে চার থেকে পাঁচটি তুলসী পাতা নিব। ভালো করে পরিষ্কার পানিতে তুলসী পাতা গুলো ধুয়ে নিব যাতে তুলসী পাতার গায়ে কোন ময়লা বা ধুলাবালি না লেগে থাকে। এরপর কাপের মধ্যে এক টেবিল চামচ মধু দিন। তারপরে তুলসী পাতা এবং মধু ভালো করে মিশ্রণ করতে হবে। মিশ্রণ করা হয়ে গেলে এটি একটি পরিষ্কার যারে সংরক্ষণ করে রাখুন।
মিশ্রনটি প্রতিদিন সকালে উঠে খালি পেটে খাবেন। এটি দেহের রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তুলসী ও মধুর মিশ্রণনের মধ্যে রয়েছে পুষ্টি ও ভিটামিন। এটি সর্দি-কাশি ও ঠান্ডা রক্ষা করে থাকে। এছাড়াও এটি বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে।
কাশি কমাতে তুলসী আর মধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তুলসির পাতা ও মধু শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা সমাধান করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তুলসী ও মধুর মধ্যে রয়েছে আন্টিসেপটিক উপাদান। এটি ত্বককে প্রশমিত করে এবং শরীরের এলার্জি ঘুমাতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
তুলসী পাতা ও মধু থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষের অকালবার্ধক্য কমায়। এটি কিডনির পাথর দূর করতে কাজ করে থাকে এবং কিডনিতে থাকা বিষাক্ত পদার্থ সরিয়ে কিডনিকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে থাকে। এই সকল রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি ঘোরোয়া পদ্ধতিতে মিশ্রণটি বানিয়ে।
কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
তুলসী হল ওষুধি গুণসম্পন্ন একটি গাছ। তুলসী পাতা দিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরি করে আমরা না নানা রোগের সমস্যা সমাধান করতে পারি। তুলসী পাতার রস সর্দি কাশি ও ঠান্ডার জন্য খুবই কার্যক্রিয়। এবার কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। প্রথমে আমাদের একটি পাত্রে এক বাটি পরিষ্কার জল নিতে হবে। এবার জলে এক মুঠো তুলসী পাতা দিয়ে পানিটাকে ফুটিয়ে নিন।
প্রথমে ভালো করে তুলসী পাতা ফুটিয়ে নিতে হবে তার পরে আঁচ কমিয়ে দিয়ে আরো ১০ মিনিট ফোটাতে হবে। তুলসী পাতা কে আরো শক্তিশালী করতে এতে মিশন এক চামচ মধু আর দুই চামচ লেবুর রস। মধু শক্তি যোগায় আর লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমাদের যদি সর্দি,কাশি ও ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে এই মিশ্রণটি খেয়ে অল্প সময়ে এই সব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং পাশাপাশি অন্যান্যর দের সাথে লড়াই করে থাকে।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আমাদের এই আর্টিকেল এর মধ্যে তুলসী পাতার উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হয়ে গিয়েছে। আপনারা যারা তুলসী পাতার উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য এবং তুলসী পাতার অন্যান্য বিষয়ে জানতে চান তাহলে আর্টিকেল শুধু আপনার জন্যই।
আশা করি ইতিমধ্যে তুলসী পাতার উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url