অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায়

অ্যালোভেরা হলো সব চেয়ে পরিচিত একটি ঔষধি গাছ। আজকে আমরা আলোচনা করবো অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায়। অ্যালোভেরা বা বেদকুমারী এটি একটি ওষধি গাছ আমরা সবাই যানি কিন্তু অ্যালোবেরা বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করে যে কতটা লাভবান হওয়া যায় সেটি আমাদের সকলের জানা নাই।



এবার আমরা যানবো অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায় যাতে আমরা অল্প খরচে অ্যালোভেরা চাষ করে বেশি লাভবান হতে পারি। এই গাছে ঔষধি গুন থাকাই এটা বাজারে খুব চাহিদা রয়েছে। এই গাছের ঔষধি গুণ ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় এই গাছ থেকে।

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আমাদের এই আর্টিকেলে ঔষধি গাছ অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায়ে বিষয়ে আলোচনা করা হবে। আরো আলোচনা করা হবে কিভাবে চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া যায় সে সম্পর্কে। কোন কোন জেলায় অ্যালোভেরা বেশি চাষ করে থাকে এই সকল বিষয়ে আলোচনা করা হবে। আপনারা যারা অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায় ও অন্যান্য বিষয় জানতে চান তাহলে আমাদের সাথেই থাকুন।

অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায়

অ্যালোভেরা হলো সুপরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি গাছ। অ্যালোভেরা দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মতো দেখা যায়। অ্যালোভেরা একটি গাছ থেকে আমরা অসংখ্য অ্যালোভেরার পাতা বাজারজাত করতে পারি। এছাড়াও একটি পাতা বা নতুন পাতা থেকেও গাছ জন্মাই। উপযুক্ত সময় হলে গাছের পাতা কেটে তা বাজার জাত করা যায়। 

আমরা সব রকম জমিতেই অ্যালোভেরা চাষ করতে পারি। তবে যে জমিতে বৃষ্টির পানি জমে না এমন উচ্চ জমিতে অ্যালোভেরা চাষ করা ভালো। লবণাক্ত চরম অম্লীয় মাটিতে অ্যালোভেরা হয় না। যেকোনো দোআস মাটিতে অ্যালোভেরা চাষ ভালো হয় কিন্তু বেলেদোআস মাটি খুব ভালো এলোভেরা চাষের জন্য। এটেল মাটিতে অ্যালোভেরা চাষ না করাই ভালো আর খেয়াল রাখতে হবে যাতে জমিতে সূর্যের আলো পরে।

জমি প্রস্তুত করার পদ্ধতি : অ্যালোভেরা চাষ করতে হলে জমি প্রথমে ভালো ভাবে পরিষ্কার কর চাষ করতে হবে। চাষের সময় হেক্টর প্রতি ১০ থেকে ১২ টন গোবর সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে এছাড়াও হেক্টর প্রতি ২২৫ থেকে ২৫০ টিএসপি এবং ৭৫ থেকে ১০০ কেজি এমওপি স্যার দিতে হবে। অ্যালোভেরা চাষে সাধারণত গোবর বেশি প্রয়োগ করলে জমির পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। 

তাই আমরা বেশি বেশি গোবর সার প্রয়োগ করব এবং যত কম সম্ভব রাসায়নিক সার ব্যবহার করব। অ্যালোভেরা চাষ আমরা সার হিসেবে ছাই ও ব্যবহার করতে পারি। ছাই ব্যবহারের ফলে অ্যালোভেরার পাতার ক্রোধ ভালো হয়। আর প্রয়োগ করা হয়ে গেলে তারপরে জমিতে চারা লাগানোর জন্য বেট তৈরি করতে হয়। পেট হবে ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার চওড়া প্রতি দুই বেডের মাঝখানে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ নালা রাখতে হবে।

জমিতে চারা রোপনের উপায়: জমিতে সাধারণত তিনটি উপায়ে চারা লাগানো যায়। প্রথমে হচ্ছে রুগ সাকার, গাছের গোড়া থেকে গজানো নতুন চারা এবং গাছের গোড়ার অংশ কেটে পুরো গাছ লাগিয়ে দেওয়া। বাণিজ্যিকভাবে রুগ সাকার খুব বেশি লাভজনক হয় না তাই এটি ভালো হয় না। 



পুরনো গাছের গুড়া থেকে গজানো চারা মাতৃগাছ থেকে আলাদা করে প্রথমে এক খন্ড জমিতে বা বেটি লাগানো হয়। সেখানে চারার বয়স যখন দুই তিন মাস হয়ে যায় তখন আবার মূল জমিতে লাগাতে হয়। এভাবে চারা লাগালে ফলন ভালো হয় কিন্তু বাজারজাত করতে বেশি সময় লেগে যায় ছয় মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। 

তবে বাণিজ্যিক চাষের জন্য সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো গাছের মাথা থেকে সরাসরি জমিতে যারা রোপন করা। এতে অল্প সময়ে অ্যালোভেরার পাতা বাজারজাত করা যায়। বছরে যে কোন সময় অ্যালোভেরার তারা লাগানো যায়। তবে আষাঢ় মাসের শুরুতে অ্যালোভেরা তারা লাগালে এটি তাড়াতাড়ি বারে। 

শিত তো বর্ষাকালী গাছ না লাগানো ভালো। সাধারণত কার্তিক অগ্রহণ মাসে যারা বেশি লাগানো হয়। এই ২-৩ মাসে মাটিতে যারা ঠিকমতো লেগে যায় শীত শেষে বসন্তে নতুন পাতা গজায় তখন পাতা সংরক্ষণ ও বিক্রি করা শুরু হয়। এই পদ্ধতিতে তারা রোপন করলে বেশি ফলন পাওয়া যায়। 


চারা শাড়ি করে লাগাতে হয় শাড়ি থেকে শাড়ির দূরত্ব ৭ ইঞ্চি এবং প্রতি শাড়িতে ৬ ইঞ্চি পরপর তারা লাগাতে হয়। ১.৫ মিটার চওড়া বেডে দুই শাড়িতে এবং ২.২৫ মিটার চওড়া বেডে তিন সারিতে যারা লাগানো হয়। ১ বিঘা জমিতে তিন হাজার থেকে চার হাজার চারা রোপন করা যায়। সাধারণত কোন রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না রাসায়নিক সারের পরিবর্তে প্রয়োগ করতে হবে খোল বা মিমখলের মত জৈব সার। 

নিয়মিত সেচের দরকার হলেও খেয়াল রাখতে হবে যে গাছের গোড়ায় পানি না চলে যায়। যদি মনে হয় ইউরিয়া সার দেওয়া দরকার তাহলে অল্প কিছু পরিমাণে ইউরিয়া সার দিতে পারেন। সার প্রয়োগের পরে আগাছা পরিষ্কার করে নীড়িয়ে মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সার বেশি প্রয়োগের ফলে রোগের আক্রমন বেড়ে যেতে পারে।

অ্যালোভেরা কিভাবে অতি তারাতারি বেড়ে উঠবে

অ্যালোভেরা অনেক জনপ্রিয় একটি ওষুধি গাছ। এতক্ষণ আমরা অ্যালোভেরার চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায় ও জমি প্রস্তুতি করা থেকে শুরু করে যারা রোপন পর্যন্ত সকল বিষয়ে জানতে পেরেছি বা আলোচনা করা হয়ে গিয়েছে। এখন আমরা জানবো অ্যালোভেরা কিভাবে অতি তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে। অ্যালোভেরা গাছকে সুস্থ রাখতে হলে তার পর্যন্ত করা খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। 

অ্যালোভেরা অতি তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠার একটি মাধ্যম হল জমিতে যেন সরাসরি সূর্যালোকের আলো পেয়ে থাকে। সূর্য আলো মাধ্যমে অতি তারাতারি এলোভেরা বেড়ে উঠবে। আবার পানিও বেড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সময় মত অ্যালোভেরা গাছটি সেচ দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এলোভেরা গাছের গোরাতে যেন পানি জমে না থাকে। 

অ্যালোভেরা গাছের জন্য পানি যেমন দরকার তেমনি অ্যালোভেরা গাছের জন্য পানি খুবই ক্ষতিকর। যদি গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকে তাহলে অ্যালোভেরা গাছ অতি তাড়াতাড়ি মারা যাবে। তাই সেই দিকে খেয়াল রেখে অ্যালোভেরা গাছ শেষ দিতে হবে। অতিরিক্ত জল দেওয়া এবং আলোর অভাব হল সাধারণ সমস্যা যা এই গাছের বৃদ্ধির ব্যাঘাত ঘটায়।

অ্যালোভেরা কতো দিন বাড়ে

অ্যালোভেরা টুকটাক আমরা চাষ করে থাকি কিন্তু আমরা জানিনা যে অ্যালোভেরা কত দিনে বাড়ে। অ্যালোভেরা কত দানে বাড়ে বা কত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এটা নির্ভর করে পরিবেশগত অবস্থার। কিন্তু আমরা সাধারণভাবে দেখতে পাই একটি স্বাস্থ্যকর অ্যালোভেরার গাছ বসন্ত এবং গ্রীষ্ম কালে প্রতিমাসে অ্যালোভেরা গাছ থেকে একটি নতুন পাতা গজায়। অ্যালোভেরার রোপনকিত জমিতে যদি সঠিক নিয়মে পানি ও রোদের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে অ্যালোভেরা অতি তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে।

অ্যালোভেরা কিভাবে সংরক্ষণ করব

অ্যালোভেরা কিভাবে সংরক্ষণ করব এটি জানা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক নিয়মে অ্যালোভেরা সংরক্ষণ না করতে পারলে এটি বেশি দিন ব্যবহার করতে পারবেন না। তাই আমাদের সঠিক নিয়মে অ্যালোভেরা সংরক্ষণ করা জানতে হবে। আমরা যদি অ্যালোভেরার জেল দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখতে চাই তাহলে আমাদের উচিত একটি যার বা কাচের বোতল বা অ্যাম্বার বোতল সংরক্ষণ করুন।

যা অ্যালোভের অতিবেগুনি বিকিরণ শোষণ করে এবং জেল উপকারিতা ও গুণাবলী নষ্ট হতে দেয় না ব্যাকটেরিয়ার দূষণের কি কম থাকে। তাই আমরা অ্যালোভেরা জেল সংরক্ষণ করার সময় কোন পরিষ্কার পাত্রে বা কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করব যাতে ব্যাকটেরিয়া ধূষণের ঝুঁকি সীমিত করতে পারে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আমাদের এয়ার টিকেলের মধ্যে অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায় ও অ্যালোভেরা বেড তৈরি করা থেকে চারা রোপন ও অ্যালোভেরা কিভাবে সংরক্ষণ করব সকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়ে গিয়েছে। আপনারা যারা উপরোক্ত বিষয়গুলো জানেন না আমার এই আর্টিকেল শুধু তাদের জন্যই।

আশা করছি ইতিমধ্যে আপনারা অ্যালোভেরা চাষ পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ উপায় অন্যান্য বিষয়ে জানতে পেরেছেন। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url