কোরবানি করা কি ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নত জেনে নেওয়া যাক
ইসলাম জাতির বছরে দুইটি বড় উৎসব হল একটি ঈদুল ফিত আর অন্যটি হল ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা বা কোরবানি ঈদে আমরা পশু কোরবানি দিয়ে থাকি কিন্তু কোরবানি সম্পর্কে আমাদের আমাদের তেমন ধারণা নাই। কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নত এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আমার আর্টিকেল এর মধ্যে আলোচনা করা হবে কোরবানি করা কি ফরজ না ওয়াজি নাকি সুন্নত।
আপনারা যারা জানেন না কোরবানি করা কি ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নত তারা আমার লেখা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। প্রিয় পাঠক এবার চলুন এবার জেনে আসি কোরবানি করা কী ফরজ না ওয়াজি নাকি সুন্নত।
কোরবানি করা কী ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নত
আমরা অনেকি কোরবানি দিয়ে থাকি কিন্তু কোরবানি করা কী ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নত সেটা আমরা যানি না। কোরবানি জরুরী কোন বিধান নাকি ঐচ্ছিক অর্থাৎ কোরবানি কি সবার জন্য করা জরুরী নাকি কোরবানি সুন্নত, নফল, মুস্তাহাব এ জাতীয় কোন আমল বা কোরবানি কয়টা করতে হয় এমন বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন জাগে আমাদের মনে।
এই বিষয়ে বলবো যে এই ক্ষেত্রে উলামায় কেরামের দুইটি প্রসিদ্ধ মত আছে। উলামায়কেরামের অনেকেই বলেন যে কোরবানি করা সকলের জন্য জরুরী। কোরবানির সময়টুকু মধ্যে যার কাছে নেছার পরিমাণ টাকা আছে তার জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব জরুরী বাধ্যতামূলক না করলে গুনাহ হবে এটা অনেক উলামায়ে কেরামের মত।
তাদের দলিল গুলো হলো : মুস্তাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ, মুস্তাদেরঁাকা হাকিম আর অনেক , কিতাব, হাদিসে এটা বর্ণিত হয়েছে যে হাদিসকে মহাহাদিস ক্রাম সহি বলেছেন। অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোরবানির করার সামর্থ্য রয়েছে , সক্ষমতা আছে বা সচ্ছলতা আছে সেই ব্যক্তি যদি কোরবানি না করে সে ব্যক্তি ঈদগা মাঠে ঈদের নামাজ পরে না আসে এমনটা সহি হাদিসে উল্লেখ করা রয়েছে।
এ ধরনের নির্দেশ সুন্নত নফল এর ক্ষেত্রে করা হয় না সাধারণত ফরজ ওয়াজিবের ক্ষেত্রেই করা হয়। মুস্তাতে আহমদী আরেকটি কথা উল্লেখ করা আছে এবং হাফেজ এবনে হাজ্জাল আল আছকাহানি বিশ্ব বিখ্যাত হাদিস ব্যাখ্যাতা তিনি বলেছেন এই হাদিসটি বিশুদ্ধ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন : নিশ্চয়ই প্রত্যেক পরিবারের লোকের উপরে বা পরিবারের উপরে একটি করে কোরবানি এবং আতীরা এটা ওয়াজিব।
আতীরা শব্দের অর্থ হল রজব মাসে যে প্রশ্নটি জবাই করা। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর বাণী অনুযায়ী প্রত্যেক পরিবারের উপরে কুরবানী করার জরুরী বা ওয়াজিব এটিও বিশুদ্ধ হাদিস। আবার অনেক উলামায়ে কেরাম বলেন কুরবানী করা ওয়াজিব নয় এটা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
সুন্নতে মুয়াক্কাদা মানে হল সুন্নত কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। কিছু কারো কিছু ব্যক্তিগণ এটা কি সুন্নত বলে যাই হোক সর্বসাকরলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান এটা হল নিশ্চিত ওয়াজিবের মতটা গ্রহণ করলে এটা বেশি সতর্কতা হয়।
জন প্রতি কোরবানি কয়টা করা যায়
এখন কার সমাজে দেখি যায় একজন ব্যক্তি দুইটা করে কোরবানি দিচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় একজন ব্যক্তি একটা গরু এবং একটা খাসি কুরবানী দিতে। তখন আমাদের মনে একটা প্রশ্ন জাগে যে জনপাতি কোরবানি কয়টা করা যায়। চলুন জানা যাক জন প্রতি কোরবানি কয়টা করা যায় এই সম্পর্কে।
আমাদের সামাজে এখন দেখা যায় যে কোরবানির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এক ধরনের প্রতিযোগিতা করতে দেখা যায়। দেখা যায় অনেক ধনী ব্যক্তি এক সাথে ৩টা গরু ৫টা গরু ৭টা গরু কোরবনি করতে বা একটা গরু একটা খাসি কোরবানি দিচ্ছি কারণ ঘরে কেউ গরুর গোস্ত পছন্দ করে আবার কেউ খাসির গোস্ত পছন্দ করে যার কারণে দুইটাই দিতে হয়।
আসলে ইসলামের শরীয়ত অনুযায়ী একটি কোরবানি যথেষ্ট একাধিক কোরবানি হওয়া জরুরি না। সূরা তিরমিজিতে বর্ণনা আছে যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম দশ বছর মদিনাতে বসবাস করেছেন হিজরতের পরে। এবং এই দশ বছরের প্রতিবছর তিনি কুরবানী করেছেন তিনি দুটি হৃষ্ট পুষ্ট ভেড়া তিনি কুরবানী করেছেন দুই করেছে তিনি যদি চাইতেন সংখ্যা অনেক বাড়াতে পারতেন।
বড় বড় উট কোরবানি দিতে পারতেন তিনি দুইটি ভেড়া কুরবানী দিয়েছেন একটি হলো মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর নিজের এবং পরিবারের পক্ষ থেকে আর অন্যটি হলো মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর উম্মতের পক্ষ থেকে। তাহলে বোঝা গেল কুরবান সংখ্যা বাড়ানোর মধ্যে কোন কল্যাণ নাই। হ্যাঁ কেউ যদি এলাকার গরিব মানুষকে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে বেশি কুরবানী করে নাম ফোটানোর উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে অবশ্যই তিনি আল্লাহতালার কাছ থেকে সাউয়াভ পাবেন।
কোরবানি অর্থ কী যেনে নেওয়া যাক
আমরা অনেকেই যানিনা কোরবানি অর্থ কী কোরবানি দেওয়ার আগে কোরবানি অর্থ যানা আমাদের খুবই প্রয়োজন। কোরবানি শব্দটি হলো আরবি শব্দ। কুরবানী বা কুরবান কে ইসলামী আইন হিসেবে উল্লেখ করা হয় জাহিদুল আজহার সময়কালীন পশু উৎসর্গের আয়োজন বা অনুষ্ঠান। ইসলামী মতে কোরবানি হলো নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির আল্লাহর সন্তুষ্টি জন্য বা পুরস্কার পাওয়ার আশায় জবাই করাকে কোরবানি বলা হয়।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আমাদের এই আর্টিকেলের মধ্যে কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজি নাকি সুন্নত এই সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে গিয়েছে। আপনারা যারা কুরবানী করা কী ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নত এই সম্পর্কে জানেন না আমার এই আর্টিকেল শুধু তাদের জন্যই।
আশা করছি ইতিমধ্যে আপনারা কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব নাকি সুন্নত এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে গিয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url