পিয়ারার চারা রোপন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো

পেয়ারা হলো খুবিই জনপ্রিয় ফল এটি সাধারণত গ্রীষ্মকালীন ফল। কিন্তু পিয়ারা এখন 12 মাসি পাওয়া যায়। পেয়ারা আমাদের দেশে অসংখ্য কৃষকদের মন জয় করতে পেরেছে। কৃষক পিয়ারা চাষ করে অল্পতেই লাভবান হচ্ছে। পেয়ারা চাষ করতে হলে আমাদের আগে পিয়ারা চারা রোপন পদ্ধতি সম্পর্কে যানতে হবে

 
পিয়ারার চারা রোপন পদ্ধতি সম্পর্কে যানা থাকলে সহজেই পেয়ারার চারা রোপন করতে পারবো। আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পিয়ারা চারা রোপনের পদ্ধতি পিয়ারা চারার পরিচর্যা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

ভূমিকা:

প্রিয় পাঠক আমরা এখানে আলোচনা করবো পেয়ারার চারা রোপন পদ্ধতি, পেয়ারা চাষ পদ্ধতি, পেয়ারা গাছের বৈশিষ্ট্য, পেয়ারা গাছের সার প্রয়োগ পদ্ধতি এবং কোন জাতের পেয়ারা চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। সাথে থাকবে পেয়ারা গাছের পরিচর্যা, সকল বিষয়ে আপনাদের মাজে তুলে ধরবো।

পেয়ারা চারা রোপন পদ্ধতি

পেয়ারা চারার রোপন পদ্ধতি টা হলো সর্বপ্রথম ভালো দেখে উচ্চ জমি বেছে নিতে হবে যাতে জমিতে বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানি জমা হয়ে না থাকে। জমি পরিচর্যা করার পরে পেয়ারার চারা রোপন করার জন্য যে গর্ত তৈরি করবেন খেয়াল রাখতে হবে যে গর্তটা ৫০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটারের মধ্যে হয়। যারা রোপনের দূরত্ব হবে ৫ থেকে ৬ হাত ফাকে ফাকে পেয়ারার চারা রোপন করবেন।

রোপন করার আগে গর্তের ভিতর পরিমাপ মত পচা গোবর সার, কম্পোস্ট, পিএসপি এবং পটাশ সার গর্তের মাটির সঙ্গে মিশাতে হবে। পেয়ারা চারা রোপন করার সময় এই মাটি গর্তে পেয়ারা চারা রোপন করতে হবে। বাংলাদেশ বিভিন্ন অঞ্চলে পেয়ারা চাষ করে থাকে। বেলে দোআঁশ মাটি পেয়ারা চাষ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। যেকোনো মাটিতেই পেয়ারা চাষ করা যায় তাতে কোন সমস্যা হবে না। পেয়ারার চারার রোপন পদ্ধতি পেয়ারা চাষ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

পেয়ারা গাছের বৈশিষ্ট্য

পেয়ারার চারা কেনার সময় লক্ষ্য করতে হবে চারা গাছটি আঁটির গাছ না কী কলমের গাছ। জমিতে যারা রোপণের জন্য কলমের গাছ নিতে হবে এবং জানতে হবে কলমের গাছটিতে বারো মাসে পেয়ারা ধরবে কিনা। যদি পেয়ারা গাছটির বারো মাস ফলন না দেয় তাহলে কৃষক লাভবান হতে পারবে না। তাই আমাদের বারো মাস যে গাছটি পেয়ারা দেয় সেই গাছটির নিতে হবে।

থাই পেয়ার গাছটি বছরে ১২ মাসে পেয়ারা দিয়ে থাকে। তাই জমির জন্য থাই পেয়ারার গাছটি নির্বাচন করতে হবে। যাতে আমরা ১২ মাসি পেয়ারা পেতে পারি। চারা ক্রয় করার সময় আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে চারাটি কোন ভাইরাসে আক্রান্ত। কোন ভাইরাস রোগী আক্রান্ত চারা জমিতে চাষ করার উপযোগী নয় এতে। একটি চারা যদি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে ধীরে ধীরে এই ভাইরাসটি অন্য সকল চারাতে ছড়িয়ে যাবে। এতে পেয়ারা গাছ বা চাড়া মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পেয়ারা গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি

পেয়ারা চাষের জন্য পেয়ারা গাছে সার প্রয়োগ করা খুবি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পিয়ারা রোপন পদ্ধতি যারা রোপন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তেমনি পেয়ারা গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি পেয়ার সতেজ এবং শক্তিশালী করে তোলার জন্য এই বিষয়ে আমাদের জানতে হবে। আবার অতিরিক্ত মাত্রায় পেয়ারা গাছে সার প্রয়োগ করলে পেয়ারা গাছের ক্ষতি হতে পারে এতে গাছ মারা যেতে পারে।

তাই আমাদের সার প্রয়োগ করার খুব খেয়াল করে সার প্রয়োগ করতে হবে। পেয়ারা গাছের বয়স অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে এবং পেয়ারা গাছের বয়স যত বাড়তে থাকবে সারের পরিমাপ বেশি হতে থাকবে।

বয়স অনুযায়ী গাছ প্রতি সারের পরিমাণ: চারা গাছে গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে ১০ থেকে ২০ কেজি। ইউরিয়া সার চারা গাছের জন্য ১৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত সার প্রয়োগ করতে পারবেন, টিএসপি সার একই পরিমাণ ১৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম সার প্রয়োগ করতে পারবেন এবং এমওপি ও ১৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে পারবেন। অতিরিক্ত মাত্রায় সার প্রয়োগ করা যাবে না অতিরিক্ত জিনিস কোন কিছুর জন্য ভালো না।

পেয়ারা ফুল আসার পরে ফুলের পরিচর্যা

পেয়ারা গাছে রোপন পদ্ধতি বা সার প্রয়োগ পদ্ধতি যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তেমনি পেয়ারার ফুল আসার সময় এর পরিচর্যা করাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পেয়ারার ফুল আসার পর খেয়াল রাখতে হবে ফুলে যেন ক্ষতিকারক কোন পোকা আক্রমণ না করতে পারি। তার জন্য আমরা ক্ষতিকর পোকা নাশক মেডিসিন স্প্রে করতে হবে যাতে ফুলে পোকা আক্রান্ত না করতে পারে।

তাই আমাদের বাগানে ফুল আসার পরে পাঁচ থেকে সাত দিন পর পোকা নাশক মেডিসিন স্প্রে করতে হবে। খুব খেয়াল রাখতে হবে ক্ষতিকর পোকা যাতে ফুলে আক্রান্ত না করতে পারে। একবার যদি ফুলে পোকা আক্রান্ত করে তাহলে সেই ফুল থেকে আর ফলন হবে না ফুলটা নষ্ট হয়ে যাবে।

পিয়ারার জাত গুলো কী কী তা সম্পর্কে জানব

পেয়ারা চাষ করতে হলে পেয়ারার জাতগুলো সম্পর্কে আমাদের পরিচিত থাকতে হবে। পেয়ার চাষ করে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা পেয়ারাগুলো বাজারজাত করতে পারি। পেয়ারা চাষ করে অনেক কৃষক মোটা অংকের টাকা আয় করে থাকছে। এই পেয়ারার আবার বিভিন্ন ধরনের জাত আছে। এখন আমরা এই জাতগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

  • থাই পেয়ারা: এটি একটি বিদেশি জাতির পেয়ারা। এটি বছরে ১২ মাস ফলন দিয়ে থাকে।
  • পান্ত প্রভাত: এই গাছের পাতা বেশি বড় হয়ে থাকে এবং প্রশস্ত হয়ে থাকে।
  • শ্বেতা : এটি উচ্চ ফলন শীল জাতগুলোর মধ্যে একটি। এই জাতের কাছে অধিক ফলন হয়ে থাকে।
  • ললিত পেয়ার : এই জাতের পিয়ারা বিতরে অংশ রং গোলাপী হয়ে থাকে।
  • এলাহাবাদ সফেদা : এইযে তেরে পেয়ারার গাছের পাতা লম্বা এবং সোজা হয়ে থাকে।
  • লখনউ ৪৯ : এই জাতটি কোনো কোনো জাইগাতে সর্দার নামে পরিচিত পেয়ারা টি এক কেজি ওজন হয়ে থাকে।

লেখকের মন্তব্য

পেয়ারা চারা রোপন পদ্ধতি এবং পেয়ারা চাষের অন্যতম বিষয়গুলো আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যদি এই বিষয় নিয়ে জানতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেল পড়ে পেয়ারা চাষের অন্যতম বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আশা করছি ইতিমধ্যে বিষয়গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটি ভিজিট করতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url