আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব

আমরা আজকে আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। আলু বাংলাদেশ অন্যতম একটি সবজির ফসল। আলুর হেক্টর প্রতি ফলন ধান গম ফলন থেকে অনেক বেশি। আলু চাষ করা হয় শীতকালে তাই আলু চাষের সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলা করতে হয় না।



আলু চাষ করতে হলে আমরা আগে আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আলু হলো স্বল্প মেয়াদী ফসল ৯০ দিন থেকে ১১০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়।

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে তুলে ধরবো আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়,আলু চাষে কীটনাশকের ব্যবহার, আলু চাষে সার প্রয়োগের নিয়ম, আলু চাষে জমি তৈরি আলুর বীজ কাটার পদ্ধতি, আলু ভাসানোর পদ্ধতি ও আরো থাকবে আলোর বীজ উৎপাদন পদ্ধতি এই সকল বিষয়ে আলোচনা করা থাকবে।

যারা আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত যানতে চাচ্ছেন আমার আর্টিকেল শুধু তাদের জন্যই। আশা করি আমার আর্টিকেল পড়ে আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব

আলু হলো জনপ্রিয় একটা সবজি। আলু চাষ করতে হলে আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। আমরা যে জমিতে আলু লাগাবো জমিটাকে ভালোকে রোটার বা টাক্টার দিয়ে ভালো করে জমি চাষ করে নিতে হবে যাতে জমির মাটি ঝুরঝুরে ও নরম হয়। তাপ পরে এই ঝুরঝুরা নরম মাটিতে আমাদের সার প্রয়োগ করতে হবে যাতে মাটির উর্বলতা বাড়ে।

যেগুলো সার আমাদের জমিতে দিতে হবে সেগুলো হলো N:P:K- 10:26:26 এই বিষয়টি হলো আলু চোর চাষের জন্য একটি আদর্শ সার তার সঙ্গে অল্প পরিমাণ ইউরিয়া সার মিশিয়ে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। N:P:K-10:26:26 এই সারটি বিঘা প্রতি ৫০ কেজি এবং ইউরিয়া ২০ কেজি আর জমি চাষ করার সময় ফসফেট (সিঙ্গেল সুপার ফসফেট ) দিতে হবে।

আর পোকা মারার জন্য কীটনাশক কি দিতে হবে তা হলো PROSPO-GR (FIPRONIL 0.3% GR) এই দানাটা দিয়ে মাটিতে অবস্থিত যে সমস্ত পোকা সব ধ্বংস করে ফেলে। এতে আলু নষ্ট হয়েওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। অর্থাৎ রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক এক সঙ্গে মিশ্রণ করে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। PROSPO-GP প্রতি বিঘাতে চার থেকে পাঁচ কেজি লাগে। চাষকৃত জমি ঠিকঠাক করে আমরা আলু চাষ করতে পারি। এতে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এবং ফলন ভালো হবে।

আলুর বীজ কাটার পদ্ধতি

আলুর চাষ করতে হলে আলু বীজ কাটার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। প্রথমে আমরা আলুর বড় বড় বীজগুলোকে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে। কাটার সময় খেয়াল রাখতে হবে এই বীজের চোখ যেন এই বীজের মধ্যে থাকে এমন যেন না হয় যেকোনো বীজের চোখ নেই তাই লক্ষ্য করবেন প্রতি বীজে কম পক্ষে একটা চোখ রাখতে হবে কারন এই চোখ থেকে গাছটা বের হবে। 

যদি বড় বড় আলু হয় তাহলে আপনাকে এভাবে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে। আর ছোট সাইজের আলুর বীজ না কেটে লাগাতে হবে। ছোট আলুর বীজ কেটে লাগালে দেখা যাবে গাছ হয়েছে টিকি হবে কিন্তু কাছটি খুব দুর্বল হবে সরু গাছ হবে তাই ছোট ২০ টাকে আপনারা কাটবেন না বড় বিট হলে সেটাকে কেটে লাগাতে পারে। বীজ কাটার পর বীজটি শোধন করে নিতে হবে।

বীজ শোধন করার জন্য আমাদের নিতে হবে ম্যানকোজেব 2.5g প্রতি লিটার পানিতে 3g মিশাতে হবে। আলুর পরিমাণ অনুযায়ী জল নিয়ে আলু গুলো ৭ থেকে ৮ মিনিট আলু ভিজিয়ে রাখতে হবে। এই জলটি তিনবার ব্যবহার করতে পারবেন তারপরে ম্যাগনেসিয়ামের কাজের ক্ষমতা কমে যাবে। পরে সাত থেকে আট মিনিট পর জল থেকে বীজগুলো তুলে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকানো হয়ে গেলে এটা জমিতে রোপন করতে পারেন।

জমিতে আলু বসানোর পদ্ধতি

এবার আমরা জমিতে আলু বসানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জানব। আলু বসানোর জন্য আমাদের প্রথমে জমিতে দাগ কেটে নিতে হবে। এই দাগ গুলোতে আলু বসাতে হবে একটি থেকে আরেকটি দাগের দূরত্ব হবে 18 থেকে ২০ ইঞ্চি বা এক হাত।

দাগ কাটা হয়ে গেলে এখন আলু রপন করবেন একটি আলু থেকে আরেকটি আলুর দূরত্ব হবে ছয় ইঞ্চি। ছয় ইঞ্চি পর পর আলু লাগাতে হবে সোজা আগে। আলু বসানো হয়ে গেলে সুন্দর করে আলুর লাইন গুলো মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

আলু চাষে সার প্রয়োগ

আলু চাষ করার জন্য আলু চাষ পদ্ধতির সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে তেমনি আলু চাষ করার জন্য আলু চাষে সার প্রয়োগ করার নিয়ম জানতে হবে। আলু উচ্চ ফলন পেতে হলে আমাদের কী কী সার ব্যবহার করতে হবে এবং প্রতি এক বিঘা জমিতে কতটুকু স্যার প্রয়োগ করতে হবে তা সম্পর্কে জানব

আলু ভালো ফলন পেতে হলে অবশ্যই সঠিক সময়ে পরিমাণ মতো সার প্রয়োগ করা উচিত। কেননা সঠিক পরিমাণে সার প্রয়োগ না করলে ভালো ফল পাবেন না। এছাড়াও সময় মত ছেচ দেওয়া ভালো ফলন পাওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আলুর জমিতে সাধারণত দুই থেকে তিন দাপে সার প্রয়োগ করা হয়। 

এক আলু রোপনের আগে জমি চাষের সময় জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। দ্বিতীয় ধাপে আলোর উপরের ২৪ থেকে ২৫ দিনের সময় তখন সার প্রয়োগ করতে হয়। এই দুইটি ধাপে কখন কি পরিমান সার দেওয়া প্রয়োজন ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করবো। যারা বাণিজ্যিক ভাবে ডায়মন্ড, কার্ডিনাল এই ধরনের জাত চাষ করবেন সেক্ষেত্রে আলু রোপনের আগে প্রতি বিঘাই যেই সার গুলো প্রয়োগ করবেন :
  • ইউরিয়া ২৫ কেজি
  • পটাশ ৭৫ কেজি
  • পিএসপি ৭৫ কেজি
  • দস্তা ১ কেজি
  • বোরন ১ কেজি
  • ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ৮ থেকে ১০ কেজি
২০ থেকে ২৫ দিনের ভেতর আলু গাছের দুই পাশের মাটি কেটে আগাছা পরিষ্কার করে তখন যে পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি বিঘায় :
  • ইউরিয়া ২৫ কেজি
  • পটাশ ২৫ কেজি
  • টিএসপি ২৫ কেজি
  • বোরন ১ কেজি
  • থিয়োভিট ১ কেজি
  • দস্তা ১ কেজি
এর সাথে ত্বরণ কীটনাশক প্রয়োগ করতে পারেন। এই সারগুলো ছিটানোর পর আলু গাছকে দুই পাশের মাটি দিয়ে ভালো করে বেঁধে দিতে হবে। মাটি দিয়ে আলু গাছ বেঁধে দেওয়ার পর দ্রুত ছেস দিতে হবে।

লেখক এর মন্তব্য

আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়ে গিয়েছে। আপনারা যারা আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান আমার এই আর্টিকেল শুধু তাদের জন্যই। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আশা করছি আপনারা ইতিমধ্যে আলু চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণার জানতে পেরেছেন। যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট টি ফলো করতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url